- SCHOOL BOARDS
- WBBSE/WBCHSE
- CLASS 9
- BENGALI
- ধ্বনি, ধাতু, উপসর্গ ও প্রত্যয়-বাংলা ব্যাকরণ
ধ্বনি, ধাতু, উপসর্গ ও প্রত্যয়-বাংলা ব্যাকরণ
Language : Bengali
1. ধ্বনি পরিবর্তন কি ? কয় প্রকার ও কী কী ?
উঃ - উচ্চারণের প্রভাবে শব্দ বা পদমধ্যস্থ স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জনধ্বনির যে পরিবর্তন হয় তাকে ধ্বনি পরিবর্তন বলে।
ধ্বনি পরিবর্তন মূলত তিন প্রকারের। যথা -
1. শারীরিক কারণ
2. মানসিক কারণ
3. বাহ্যিক কারণ
2. ধ্বনি পরিবর্তনের মূল কারনগুলি সংক্ষেপে লেখ।
উঃ - 1. শারীরিক কারণ - শারীরিক কারণগুলিকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়।
ক ) বাকযন্ত্রের ত্রুটি - বক্তার বাকযন্ত্রের ত্রুটি থাকলে ধ্বনি বিকৃত হয়ে পরিবর্তিত হয়।
যেমন - দুধ >ডুড
খ ) শ্রবণযন্ত্রের ত্রুটি - বক্তার শ্রবণযন্ত্রের ত্রুটি থাকলেও ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। যেমন - সিগন্যাল >সিঙ্গেল
গ ) দ্রুত উচ্চারণের - তাড়াতাড়ি উচ্চারণ করলে অনেক সময় ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। যেমন -যা ইচ্ছে তাই >যাচ্ছেতাই
2. মানসিক কারণ - মানসিক কারণগুলিকে নিম্নলিখিত কয়েকটি প্রকারের।
ক ) উচ্চারণে অক্ষমতা - মানসিক কারণে উচ্চারণের অসাবধানতাবশত ধ্বনি পরিবর্তিত
যেমন - বানর >বান্দর >বাঁদর
খ ) উচ্চারণে ত্রুটি - বিদেশী কোনো শব্দ সঠিকভাবে জানা না থাকায় অনেক সময় ধ্বনি পরিবর্তিত হয়।
গ ) অন্ধবিশ্বাস - অন্ধবিশ্বাসজনিত কারণেও ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। যেমন - সাপ >লতা, কালো > ময়লা
3. বাহ্যিক কারণ - বাহ্যিক কারণগুলি নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়।
a. অন্যভাষাগোষ্ঠীর প্রভাব - দীর্ঘদিন অন্যভাষাগোষ্ঠীর অধীনে থাকার জন্য অন্য ভাষার প্রভাবে ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। যেমন - হিন্দি ভাষার প্রভাবে বন্ধ >বনধ
b. ভৌগোলিক কারণ - ভূপ্রকৃতির কারনে জার্মানি ও ইংরেজি ভাষা ফারসি ও ইতালি ভাষার তুলনায় কর্কশ হয়।
c. ঐতিহাসিক কারন - সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধ্বনি পরিবর্তিত হয়। যেমন - সিন্ধু >হিন্দু
3. ধাতু কাকে বলে ? কয় প্রকার ও কী কী ?
উঃ - ক্রিয়াপদের মূল অবিভাজ্য অংশকে ধাতু বলে। যেমন - আমি লিখছি - এখানে লিখছি ক্রিয়াপদটি লিখ + ইতেছি - এই লিখ অংশটি হল ধাতু।
ধাতু চার প্রকার, যথা -
1. মৌলিক ধাতু
2. সাধিত
3. বহুপদ বা সংযোগমূলক ধাতু
4. যৌগিক
মৌলিক ধাতু - যে ধাতুকে আর ভাঙা যায় না তাকে মৌলিক ধাতু বলে।
যেমন - বল, কর, লিখ ইত্যাদি।
1. বর্গ কয় প্রকার ?
উঃ - ক → ঙ
চ → ঞ
ট → ণ
ত → ন
প → ম
2. নাসিক্য ধ্বনি কয়টি ?
উঃ - ঙ, ঞ, ণ, ন, ম
3. ক থেকে ঙ পর্যন্ত ধ্বনিকে বলে → কণ্ঠ্যধ্বনি
4. চ থেকে ঞ পর্যন্ত ধ্বনিকে বলে → তালব্যধ্বনি
5. ট থেকে ণ পর্যন্ত ধ্বনিকে বলে → মূর্ধন্যধ্বনি
6. ত থেকে ন পর্যন্ত ধ্বনিকে বলে → দান্তব্যধ্বনি
7. প থেকে ম পর্যন্ত ধ্বনিকে বলে → ওষ্ঠ্যধ্বনি
সাধিত ধাতু - কোনো মৌলিক ধাতু বা শব্দের সঙ্গে এক বা একাধিক প্রত্যয় যোগে সাধিত হয়।
যেমন - কর + আ - করা (করানো অর্থে )
শুন +আ - শোনা ( শোনা অর্থে )
বহুপদ বা সংযোগমূলক ধাতুর - বিশেষ্য, বিশেষণ, বা ধনাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে কর, হ, দে, পা ইত্যাদি যোগে বহুপদ ধাতু গঠিত হয়।
যেমন - ভোজনকর, রাজি হ , লাফ দে।
যৌগিক ধাতু - ইহা বা ইতে যোগে অসমাপিকা ক্রিয়ার পর সমাপিকা ক্রিয়া গঠন করতে যৌগিক ধাতুর প্রয়োজন হয়। যেমন - খাইয়া ফেল, দেখিতে থাক।
1. উপসর্গ কাকে বলে ? উৎসের দিক থেকে উপসর্গ কয় প্রকার ও কী কী ?
উপসর্গ - যে সকল অব্যয় ধাতুর পূর্বে বসে ক্রিয়ার অর্থের পরিবর্তন ঘটায় বা নতুন শব্দ গঠন করে তাদের উপসর্গ বলে। যেমন -
উপসর্গ | শব্দ | নতুন শব্দ |
প্র | তাপ | প্রতাপ |
অনু | বাদ | অনুবাদ |
উৎসের দিক থেকে উপসর্গ তিন প্রকার। যথা - সংস্কৃত উপসর্গ, বাংলা উপসর্গ এবং বিদেশি উপসর্গ।
2. সংস্কৃত উপসর্গ কয়টি ? উদাহরণ দাও।
উঃ - সংস্কৃত উপসর্গ ২০ টি। যেমন - প্র, পাড়া, অপ, সম ইত্যাদি।
3. বাংলা উপসর্গ যোগে কতগুলি শব্দ গঠন কর।
উপসর্গ | শব্দ | নতুন শব্দ |
অ, আ | বেলা, দেখা, জানা, কাল, কাঁচা | অবেলা, অদেখা, অজানা, আকাল, আকাঁচা |
কু | প্রথা | কুপ্রথা |
হা | ভাতে, ঘরে | হাভাতে, হাঘরে |
পাতি | লেবু, হাঁস | পাতিলেবু, পাঁতিহাস |
4. বিদেশী উপসর্গ যোগে 4 টি শব্দ গঠন কর।
উপসর্গ | শব্দ | নতুন শব্দ |
ফি | বার, বছর | ফিবার, ফিবছর |
দর | দালান, কাঁচা | দরদালান, দরকাচা |
বে | কসুর, ওয়ারিশ | বেকসুর, বেওয়ারিশ |
5. বিদেশি উপসর্গ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উঃ - বিদেশি ভাষার (ফারসি, আরবি, ইংরাজি ) বর্ণ বা শব্দাংশ বা শব্দ বাংলা ভাষায় উপসর্গের মতো ব্যবহৃত হয়। এগুলি ধাতুর পূর্বে বসে না, বিশেষ্য বা বিশেষণের পূর্বে বসে এগুলিকে বিদেশি উপসর্গ বলে।
যেমন - হেডপণ্ডিত, ফুলমোজা, মিনি-বাস, বদহজম।
1. প্রত্যয় কাকে বলে ? কয় প্রকার ও কী কী ?
উঃ - যে অর্থহীন বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু বা শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ সৃষ্টি করে তাকে প্রত্যয় বলে।
প্রত্যয় দুই প্রকার। যথা - ধাতুপ্রত্যয় বা কৃৎপ্রত্যয়
শব্দপ্রত্যয় বা তদ্ধিত প্রত্যয়
2. কৃৎপ্রত্যয় কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উঃ - যে প্রত্যয় ধাতুর পরে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে ধাতুপ্রত্যয় বা কৃৎপ্রত্যয় বলে।
যেমন - চল + অন্ত → চলন্ত
গম + তব্য → গন্তব্য
3. কৃৎপ্রত্যয় যোগে 4 টি শব্দ গঠন করো।
উঃ - কৃ + অনীয় → করণীয়
পঠ + য → পাঠ্য
গদ + য় → গদ্য
বৃৎ + মান →বর্তমান
4. শব্দপ্রত্যয় কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উঃ - যে প্রত্যয় শব্দের পরে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে শব্দপ্রত্যয় বলে।
যেমন - তিল + অ → তৈল
চনক + য →চাণক্য
5. তদ্ধিত প্রত্যয় যোগে 4 টি শব্দ গঠন করো।
উঃ - রাবন + ই → রাবনি
দেশ + ঈয় → দেশীয়
লাজ + উক → লাজুক
ভাড়া + টে → ভাড়াটে
6. বিদেশী প্রত্যয় যোগে 4 টি শব্দ গঠন করো।
উঃ - বাবু +আনা → বাবুয়ানা
ঘুষ +খোর → ঘুষখোর
কারি +গর →কারিগর
চিড়িয়া +খানা →চিড়িয়াখানা
7. প্রত্যয় ও বিভক্তির পার্থক্য লেখ।
প্রত্যয় | বিভক্তি |
১. যে সমস্ত বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি ধাতু বা শব্দের পর যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে প্রত্যয় বলে | ১. যে সমস্ত বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে রূপান্তরিত করে তাদের বিভক্তি বলে। |
২. যেমন - গিরি, বাজ ইত্যাদি | ২. এ, কে, তে, ইত্যাদি |
৩. প্রত্যয় শব্দ গঠন করে যেমন - দাদা +গিরি - দাদাগিরি | ৩. বিভক্তি পদ গঠন করে। যেমন - বাজার +এ - বাজারে |
8. স্বার্থিক প্রত্যয় কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উঃ - যে প্রত্যয় যোগ করলে মূল শব্দটির অর্থ এবং প্রত্যয় গঠিত শব্দের অর্থ একই থাকে তাকে স্বার্থিক প্রত্যয় বলে। যেমন - বন্ধু + অ - বান্ধ্য
চেতনা + অ - চৈতন্য
9. নির্দেশক কাকে বলে ?
উঃ - যে সমস্ত বর্ণসমষ্টি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দটির বচনকে নির্দেশ করে তাদের নির্দেশক বলে।
যেমন - টি, টা, গুলি, গুলো ইত্যাদি।